ব্রেকিং নিউজ

শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক বিশ্ব কবি “রবি”র জন্মদিন আজ! লেখক ঃ দেবিকা রানী হালদার

বিষয় ঃ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক বিশ্ব কবি “রবি”র জন্মদিন আজ!
লেখক ঃ দেবিকা রানী হালদার।
তারিখ ঃ ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১.
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বিশ্ব কবি রবিবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আজ একশত বাষট্টি তম জন্ম বার্ষিকী! তিনি সাহিত্যের এমন কোন শাখা নাই যে শাখার মগডালে আরোহন করেন নাই! তিনি ছিলেন কবি উপন্যাসিক সঙ্গীতস্রষ্টা নাট্যকার চিত্রকর ছোট গল্পকার প্রাবন্ধিক অভিনেতা নাট্য পরিচালক কন্ঠ শিল্পী রাজনীতিবিদ সমালোচক দার্শনিক ও প্রেমিক! এই পাকাচুল, মুখ ভরা গোঁফ দাড়ি দেখে ব্যক্তি জীবনে রবীন্দ্রনাথ কবি ছিলেন প্রেম করেন নাই, কেউ ভাবেন, তার ভাবনা ভুল!
তিনি সমালোচক ও ছিলেন। লেখার সমালোচনা করছেন অনেকের এমন কি মহাত্মা গান্ধীর সমালোচনা করতেও
পিছু হটেন নাই!

তিনি রাজনিতিবিদ ছিলেন বৈকি! তিনি ১৯১৯ সালে ডঃ মানিকের গ্রেফতার প্রতিবাদের অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগ সমাবেশে ব্রিগেডিয়ার ডায়ারের নির্দেশে মহা হত্যা যজ্ঞের প্রতিবাদে ইংরেজ দেয়া “নাইট” উপধি ত্যাগ করেন ঘৃণা ভরে !
তিনি বঙ্গভঙ্গ রদ আন্দোলনে দারুন ভুমিকা রেখেছিলেন!
ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ ছিলেন তা ডঃ মানিক কেন্দ্রিক ঘটনায় নাইট উপধি পরিত্যাগে বোঝা যায়। তিনি অখণ্ড ভারত রাখতে চেয়েছিলেন। ধর্মীয় বৈষম্য তিনি একদম পছন্দ করতেন না এবং সেই ধর্মীয় বিভাজনে আলাদা রাষ্ট্র তিনি মানতে পারেন নাই এবং এই বিভেদ আজীবন চলবে তা দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ বুঝছিলেন! তাকিয়ে দেখুন আজ পাকিস্তান ভারতের জিয়াইয়ে রাখা শত্রুতার দিকে!

দেবদেবী, অদৃশ্য শক্তি পূজা/এবাদত থেকে ‘মানবতাই’ ধর্ম মনে করতেন। বিহারের ভুমিকম্পে প্রচুর লোক মারা গেলে গান্ধী বলেছিলেন, “ঈশ্বরের প্রতিশোধ!” রবীন্দ্রনাথ তা প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, “অবৈজ্ঞানিক বক্তব্য!”
তিনি নিজে ব্যারিস্টারি পড়তে বিলেত গিয়েছিলেন, দেড় বছর পর কোন ডিগ্রি না নিয়ে সাহিত্য প্রেমে ফিরে আসেন!
তিনি মাত্র সতেরো বছরে বিলেতে পা রেখেছিলেন! আট বছরে কবিতা লিখেছিলে! তার প্রকাশিত প্রথম কবিতা “অভিলাষ”! বাইশ বছর বয়সে বিয়ে ১৮৮৩ সালে তাদের থেকে বেশ নিচু ঘরের মেয়ে মৃণালিনী দেবীকে! মাত্র উনিশ বছর দাম্পত্য জীবনের পর ১৯০২ সালে মৃণালিনী মারা যান। ১৯১৫ সালে বৃটিশ নাইট উপধি দেয়! ১৯১৩ তে গীতাঞ্জলি নিজে ইংরেজি করে জমা দেন এবং নোবেল পুরস্কার পান! তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিষেকে প্রধান অতিথি হিসাবে নিমন্ত্রিত হন এবং ডিলিট উপধিতে ভুষিত হন!

তিনি একজন দূঃখী লোক ছিলেন বলা যায়! ১৪ বছর বয়সে মাতৃবিয়োগ ঘটে! ১৯ বছর দাম্পত্য জীবন পরে সহধর্মিণী কে হারান, পাঁচ সন্তানের মধ্যে রেনু ও সমীন্দ্রকে অল্প বয়সে হারান। তিনি বড় ছেলে রথীন্দ্র নাথ কে (১৯০৫) ও কনিষ্ঠ মেয়ে মীরার স্বামী যোগেন্দ্রনাথ কে (১৯০৭)যুক্তরাষ্ট্রে
আধুনিক কৃষির উপর স্নাতক উত্তর ডিগ্রি আনতে পাঠান!
দুজনের খরচ টানতে স্ত্রীর গহনা ও বসত বাড়ি বিক্রি করতে হয়! যোগেন চারবছর পর ডিগ্রি না নিয়ে ফেরত আসে মদ্যাপি হয়ে। তিনি মীরাকে যোগেন্দ্রনাথের সাথে তার অমতে বিয়ে দিয়েছিলেন! মীরার উপর অত্যাচার হতো এবং তার অর্থ ষোগাতে জমিদারি বেচতে হয়েছিলো। এক সময় মেয়ের উপর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সৃষ্টি কর্তার কাছে প্রার্থনা করেন ” মীরাকে” তুলে নিতে! সত্যি ই মীরা অসুস্থ হয়ে মৃত্যু বরন করে। মৃত্যুর সংবাদ শুনে পথের থেকে গাড়ী ঘুরিয়ে ফেরত আসেন, লাশ দেখতে যান নাই!
এ কষ্ট তাকে শয্যাশায়ী করে বার বার — চারবছর ধারাবাহিক অসুস্থ হয়ে ১৯৪১ সালে ৮৫ বছর বয়সে মৃত্যু বরন করেন যার দুনিয়ায় আগমন ঘটেছিলো কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে ২৫ শে বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দে এবং শেষ হয় ২২ শে শ্রাবন ১৩৪৮ বঙ্গাব্দে (৭ই আগষ্ট ১৯৪১).

রবীন্দ্রনাথের পূর্বপুরুষের আদিবাস ছিলো খুলনার রূপসা
ইউনিয়নে। তিনি সাহিত্যের সব অঙ্গনে বিচরন করেও ২০০ টা ছবি একেছিলেন এবং প্রায় হাজার দুই গান লিখেছিলেন! তিনি বাংলাদেশ ভারতের জাতীয় সঙ্গীত রচয়িতা, শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত ও তার অনুকরণে রচা!
এখন ও হাজার হাজার বিদেশি রবীন্দ্র সঙ্গীত রপ্ত করেন, গানের আসল মাধুর্য রবীন্দ্র সঙ্গীতে আছে যা মানুষ কে ধ্যানে অন্য জগতে নিয়ে যায়!

বিনম্র শ্রদ্ধা হে বিশ্ব কবি আমি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র তোমার একজন অনুসারি! আশীর্বাদ করো যেখানে তুমি আছো!

ক্যাপশন ঃ
কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.