ব্রেকিং নিউজ

উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেট আছে, চাকরি নাই।তাহলেতো উচ্চ শিক্ষার কোন প্রয়োজন নাই।

আমার হেডলাইনটা দেখে অনেকে বলতে পারেন,আমি উচ্চ শিক্ষার বিপক্ষে। না,আমি উচ্চ শিক্ষার পক্ষে। কিন্তু, উচ্চ শিক্ষা অর্জন করার পর চাকরি দেয়ার নামে যে পতারনা করা হচ্ছে আমি সেটার বিপক্ষে।
কারন,অতীতের কিছু কথা আমি আপনাদেরকে স্বরন করে দিচ্ছি। বিভিন্ন লোকের কাছে শুনেছি ৮০ দশকে ৯০ দশকে কেউ যদি এসএসসি পাস করতো তাহলে গ্রামের সবাই খুশি হয়ে মিছিল করতো মিষ্টি বিতরণ করতো।ঐ সময়ে পাস করা খুব কঠিন ছিলো।আবার এটাও শুনেছি সরকারি চাকরি পাওয়াটা খুব সহজ ছিলো,যারা শিক্ষিত লোক তাদেরকে ধরে নিয়ে সরকারি চাকরি দিত।
এখন হচ্ছে তার বিপরিত।কিন্তু, একটা জায়গায় মিল আছে। ছাত্র-ছাত্রীরা খুব কষ্ট করে উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেট অর্জন করে। কিন্তু, বর্তমানে উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেট অর্জনের কোন মূল্য নাই,চাকরিও নাই।
যদি উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেটের কোন মূল্য না থাকে তাহলে এতো টাকা পয়াসা খরচ করে কষ্ট করে উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেটের কোন প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করিনা।এই দেশে লক্ষ লক্ষ যুবক যুবতীরা অনার্স মাস্টার্স পাস করে বেকার হয়ে ঘুরতেছে।একটা যুবক উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে কেন? ভালো একটা চাকরি পাওয়ার আশায়। কিন্তু, চাকরিতো পাচ্ছেইনা উল্টো চাকরি পাওয়ার আশায় টাকা পয়সা খরচ করে পতারনার শিকার হচ্ছে। কিভাবে পতারনার শিকার হচ্ছে তার প্রমান আমি আপনাদেরকে দিচ্ছি। একটা সরকারি চাকরি অথবা প্রাইভেট কম্পানিতে ভালো বেতনের চাকরি পেতে হলে অনেকগুলো ধাপ অতিক্রম করতে হয়।যেমন,সার্কুলার অনুযায়ী আবেদন করতে হয়,আবেদন করতে হলে পদ অনুযায়ী ২০০, ৩০০,৪০০,৫০০ টাকা পর্যায়ক্রমে অনেক টাকা দিতে হয়।তারপর পরীক্ষা দিতে হয়, ভাইবা দিয়ে পাস করলে ভাগ্য থাকলে চাকরিতে জয়েন্ট করতে হয়।এখন আমার আপত্তি এখানে একজন অনার্স মাস্টার্স পাস করা বেকার ছেলে আবেদন ফ্রি বাবদ টাকা পাবে কোথা থেকে।চাকরি করার জন্য পরীক্ষা বা কেন দিতে হবে? সেকি পরীক্ষা দেওয়া ছাড়া সার্টিফিকেট অর্জন করেছে! একটা সিটের জন্য হাজার হাজার বেকার আবেদন করতেছে।এবং তাদের কাছ থেকে সর্বনিম্ন ২০০ টাকা করে নেওয়া হয় তাহলে কত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তা হিসাব করার মতো নয়।এভাবেই হাজার হাজার বেকার চাকরি পাওয়ার আশায় পতারনার শিকার হচ্ছে।

আবার বলা হচ্ছে উদ্যোগতা হওয়ার জন্য। একটা গরীব বেকার ছেলে বা মেয়ে কিভাবে উদ্যোগতা হবে।তার কি টাকা আছে? নাকি সরকার তাকে ভাতা দিচ্ছে? উদ্যোগতা হওয়ার জন্য মূলধন প্রয়োজন টাকার প্রয়োজন। তাদেরকে কে টাকা দিবে? এই প্রশ্ন তাদের কাছে যারা উদ্যোগতা হওয়ার জন্য বলতেছেন?
আর যদি নিজের টাকায় উদ্যোগতা হওয়াই লাগে তাহলেতো এতো টাকা পয়সা খরচ করে উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেট অর্জন করার কোন প্রয়োজন নাই।এসএসসি কিংবা এইচএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করলেই চলে।আবার দেখা যাচ্ছে
অনেক অনার্স মাস্টার্স পাস করা লোক চাকরি না পেয়ে বিদেশ চলে যাচ্ছে। সেখানে একজন নিরক্ষর ব্যক্তি যে কাজ করে অথবা একজন এসএসসি কিংবা এইচএসসি পাস করা ব্যক্তি যে কাজ করে, একজন অনার্স মাস্টার্স পাস করা ব্যক্তি সেই কাজই করে।তাহলে এতো কষ্ট করে টাকা পয়সা খরচ করে উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেট অর্জন করার কি লাভ হলো?

নিয়ম ভঙ্গ করেছে সরকার দলিও লোক।
ইদানীং একটা বিষয় খুব ভাইরাল হয়ে পড়েছে। মুক্তা নামের একটি মেয়ে চাকরি পাওয়ার উদ্দেশ্যে আন্দোলন করেছিলো,লাইভে এসে নিজের অর্জিত সার্টিফিকেট পুড়ে ফেলেছে। সেটা দেখে সরকার দলিও লোক তাকে সরকারি চাকরি দিয়ে দিয়েছে। আমিতো দেখছি নিয়ম ভঙ্গ করেছে সরকার দলিও লোক। কিভাবে? এই দেশের নিয়ম অনুযায়ী কাউকে নিয়োগ দিতে হলে প্রথমে চাকরির সার্কুলার দিতে হয়।তারপর,যে ব্যক্তি চাকরি করবে।তাকে সার্কুলার অনুযায়ী আবেদন ফ্রি জমা দিয়ে আবেদন করতে হয়।লিখিত পরীক্ষা দিতে হয় ভাইবা পরীক্ষা দিয়ে পাস করলে চাকরিতে জয়েন্ট করতে হয়।এই যে মুক্তা নামের মেয়েটিকে যে চাকরি দেওয়া হলো।একটা নিয়মও তো পালন করা হলো না।এটাকে কি নিয়ম ভঙ্গ করা বলা হয়না?
মেয়েটি আন্দোলন করেছে সার্টিফিকেট পুড়েছে বিদায় চাকরি দিয়ে দিতে হবে? এটা কোন নিয়মের ভিতর পড়ে? প্রশ্ন তাদের কাছে।আন্দোলনতো আরও অনেক ছেলে মেয়ে করেছে। তাদেরকে চাকরি দেন্না কেন?
এখনতো আমিও আন্দোলন করবো বিনা আবেদনে বিনা পরীক্ষায় আমি আমার চাকরি চাই।আর যদি চাকরি দিতে না পারেন? তাহলে উচ্চ শিক্ষার নামে ব্যবসানীতির কোন প্রয়োজন নাই।

এই জন্য আমি সরকারকে বলতে চাই।উল্টাপাল্টা কাজ না করে বেকারত্বের হার কিভাবে কমানো যায় সেই পরিকল্পনা করুন?
প্রয়োজনে আমার পরামর্শ হচ্ছে, প্রতিটি ছেলে মেয়ে নিরক্ষর মুক্ত করার জন্য এসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করানো হউক।তারপর,এসএসসি পাস করার পর ৪-৫ টি ভাষার উপর মিনিমাম তিন বছরের কোর্স করানো হউক।পাশাপাশি যে যেই কাজ করতে আগ্রহী তাকে সেই কাজের প্রতি অভিজ্ঞতা অর্জন করানো হউক।তিন বছর ভাষার উপর কোর্স শেষে যারা পরীক্ষায় পাস করবে।তাদেরকে পরবর্তী তিনবছর যে কাজের উপর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে সে কাজের উপর ভালোভাবে কোর্স করানো হউক।এভাবে যদি করা হয়। সে যদি কোর্স গুলো সম্পন্ন করে। তাহলে সে চাইলে দেশে বেকারত্ব দূর করতে পারবে অথবা যে যেই ভাষার উপর খুব অভিজ্ঞ সে সেই ভাষা ব্যবহার করে বিদেশে গিয়ে বেকারত্ব দূর করে টাকা পয়সা আয় করতে পারবে।

✍️:- রিয়াদ হোসাইন

Leave A Reply

Your email address will not be published.