ব্রেকিং নিউজ

আ.লীগের সংসদীয় দলের সভা আজ চূড়ান্ত হবে রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী

রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে আজ মঙ্গলবার সংসদীয় দলের বৈঠকে বসবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতীয় সংসদ ভবনে সরকারি দলের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ ২৪ এপ্রিল শেষ হবে। এর আগেই বেছে নিতে হবে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতোমধ্যে এই পদে নির্বাচনের জন্য তফশিল ঘোষণা করেছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তফশিল অনুযায়ী, ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির পদে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। পরের দিন ১৩ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। একাধিক প্রার্থী থাকলে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে ভোটগ্রহণ-পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ-সদস্যরা ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সেক্রেটারি ও জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি বলেন, সংসদীয় দলের সভা নানান কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এছাড়াও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংসদীয় দলের সভায় আলোচনা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নিশ্চয়ই আমাদের সামগ্রিক বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন।

এর আগে ১২ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের ষষ্ঠ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এবারের বৈঠক সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য বলেন, মূলত রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতেই সংসদীয় দলের এবারের বৈঠক ডাকা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ থেকে রাষ্ট্রপতি পদে কাকে সমর্থন দেওয়া হবে, এ নিয়ে দলীয় কোনো ফোরামেই আলোচনা হয়নি-এমন দাবি করে তিনি বলেন, বিভিন্ন জনের নাম শোনা গেলেও এর কোনো ভিত্তি নেই। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাই এটি ঠিক করবেন।

সংবিধান অনুযায়ী সংসদ-সদস্যরাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটার। তাদের ভোটেই নির্বাচিত হবেন দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। এই পদে প্রার্থীর প্রস্তাবক এবং সমর্থকও হতে হয় সংসদ-সদস্য থেকে। প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী দেবে না বলে ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে। আর বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই নির্বাচিত হবেন। তাই সংসদীয় দলের বৈঠকে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার পাশাপাশি প্রস্তাবক এবং সমর্থক কারা হবেন, তাও চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।

১৯৯১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ-সদস্যদের ভোটে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) তাতে নির্বাচনি কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই আইনের সপ্তম ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনি কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবেন। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

স্বাধীনতার পর থেকে ২১ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৭ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ প্রান্তে রয়েছেন। সেই হিসাবে নতুন রাষ্ট্রপতি হবেন এই পদে অষ্টাদশ ব্যক্তি। দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একবারই সংসদের কক্ষে ভোট করতে হয়েছিল। পরে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.