ব্রেকিং নিউজ

ইকবাল পাগল নয়, ভবঘুরেও নয়: সিআইডি

কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ রেখে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি ইকবাল হোসেন ‘পাগল বা ভবঘুরে নয়’ বলে জানিয়েছেন সিআইডি কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজওয়ান।

রিমান্ডে থাকা ইকবাল হোসেন ইতোমধ্যে সিআইডিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য’ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

সোমবার সন্ধ্যায় সমকালকে সিআইডি কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজওয়ান বলেন, ‘রিমান্ডে থাকা আসামি ইকবাল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। ইকবাল হোসেনকে পাগল ও ভবঘুরে বলা হলেও আসলে সে তা নয়। সে ঘটনার পর সুকৌশলে কুমিল্লা থেকে কক্সবাজার পালিয়ে যায়।’

গত ১৩ অক্টোবর নগরীর নানুয়ারদীঘির পাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় কুমিল্লা নগরের কয়েকটি পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এছাড়া জেলার সদর দক্ষিণ ও দাউদকান্দির দুটি মণ্ডপে হামলা হয়। এর জেরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, নোয়াখালীর চৌমুহনী, রংপুরের পীরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

গত ২১ অক্টোবর ইকবালকে কক্সবাজার সৈকত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সমকালের হাতে আসা একটি সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নানুয়ার দীঘির পাড়ের অদূরে দারোগাবাড়ি মাজারের মসজিদ থেকেই কোরআন শরীফটি সংগ্রহ করে মণ্ডপে রাখেন ইকবাল।

১৭ মিনিটের ওই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন রাতে কয়েক দফায় ইকবাল হোসেন মাজার সংলগ্ন মসজিদে প্রবেশ করেন। রাত ১০টা ৫৮ মিনিটে তিনি মসজিদে যান। পরে বের হয়ে আসেন। এ সময় মসজিদে দুইজন মুসল্লি ছিলেন। পরে আবার রাত ২টা ১২ মিনিটে মসজিদের একটি বক্স থেকে কোরআন নামিয়ে ফ্লোরে রেখে বের হয়ে যান। সর্বশেষ রাত ২টা ১৭ মিনিটে আবারও মসজিদে গিয়ে কোরআন হাতে বের হয়ে যান।

ঘটনাস্থলের আশেপাশের অন্তত ১২টি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে মণ্ডপে কোরআন রাখা যুবক ইকবাল হোসেন বলে নিশ্চিত হলেও এর নেপথ্যে কে বা কারা- সে বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজওয়ান জানান, কুমিল্লার নানুয়ারদীঘির পাড়সহ বিভিন্ন এলাকার সহিংসতার ভিডিওচিত্র ‘কুমিল্লা টাইমস’ নামের একটি নিউজ পোর্টালে লাইভ প্রচার করে সহিংসতা উস্কে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘কুমিল্লা টাইমস’ নামের স্থানীয় একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে।

সিআইডি-কুমিল্লার পরিদর্শক আতিকুর রহমান কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় এই নিউজ পোর্টালের সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে সোমবার এই মামলায় সাজ্জাদ হোসেন শিমুল ও ফয়সাল মবিন পলাশ নামে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। দুজনে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার পর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে তাদের।

খান মোহাম্মদ রেজওয়ান জানান, কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া ১২ মামলায় ৯৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

Leave A Reply

Your email address will not be published.