জাতীয় শিক্ষক দিবস : প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি
আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপনের সাতাশ বছর পূর্তি হলো। বছর বছর বিশ্ব শিক্ষক দিবস পলিতে হচ্ছে মাগার শিক্ষকের ভাগ্যের কোনো পরিবতন হচ্ছেনা।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে শিক্ষকের মর্যাদা দেওয়া হয়; যা আমাদের দেশে নেই।পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে শিক্ষক দিবসে সকল স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের প্রিয় শিক্ষককে স্মরণ করে,আশির্বাদ নেয়, মিষ্টিমুখ করায়, উপহার দেয়। বাংলাদেশে দিবসটি নামকাওয়াস্তে পালন করা হয়। দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করে শিক্ষকদের সম্মানিত করলে তাঁরা মানসিক তৃপ্তি লাভ করবেন।
১৯৯৪ সালে ইউনেস্কোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনে ততকালীন মহাপরিচালক ফেডেরিকো মেয়রের প্রস্তাবক্রমে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সরকারগুলোর শিক্ষার উন্নয়নের জন্য ১৪৪টি প্রস্তাব স্মরণীয় করে রাখতে ৫অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়।
মহান এ দিবসটিতে সকল জীবিত শিক্ষকদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা । মৃত্যুবরণ করা শিক্ষকদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। বিশেষ করে সম্প্রতি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করা আমার প্রতিষ্ঠানের মালিবাগ শাখার প্রাণপ্রিয় ইনচার্জ জনাব রফিকুল ইসলাম স্যারের পরলৌকিক কল্যাণ কামনা করছি।
এদেশের শিক্ষক সমাজ বিশাল অট্রালিকা চায়না বরং তাঁরা নূন্যতম মান সম্মান নিয়ে বাঁচতে চায়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের শিক্ষদের জীবনমানও উন্নত হওয়া সময়ের দাবী । বেতন ভাতা ও সামাজিক মর্যাদার দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ যে বেশি এগিয়ে রয়েছে তা বলা যাবে না। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে একজন প্রাথমিকের শিক্ষকের বেতন শুরুতেই ২৯হাজার টাকা সে তুলনায় আমাদের দেশে প্রাইমারি , মাধ্যমিক , উচ্চ মাধ্যমিক ও কলেজের কী অবস্থা আল্লাহ মালুম! বাংলাদেশের কাছাকাছি যেসব দেশের জিডিপি, তার মধ্য এশিয়ার দেশ কাজাখস্তান, ইথিওপিয়া, আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়া এবং সুদূর আমেরিকা মহাদেশের ব্রাজিলের শিক্ষকদের বেতন আমাদের থেকে কয়েকগুণ বেশি।
The Guardian পত্রিকায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চীনের শিক্ষকরা সেদেশের সকল নাগরিকের মধ্যে সর্বোচ্চ সম্মান পেয়ে থাকেন।চীনে একজন ডাক্তার যে সুবিধা ভোগ করেন, একজন শিক্ষক তার কাছাকাছি সুবিধা ভোগ করেন।পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাস্ট্র,তুরস্ক, গ্রীস, দক্ষিণ কোরিয়া, মিশর প্রভৃতি দেশের শিক্ষকরা সর্বোচ্চ মুল্যায়ন পেয়ে থাকেন।বৃটেনের প্রধান শিক্ষকরা যে মুল্যায়ন পেয়ে থাকেন, পৃথিবীর আর কোথাও তা নেই।চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক এবং মিশরের বাবা-মা’রা তাদের সন্তানদেরকে শিক্ষক হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশী উৎসাহ দিয়ে থাকেন।
সিঙ্গাপুরের শিক্ষকরা পৃথিবীর মধ্যে সর্বোচ্চ বেতন পেয়ে থাকেন।তাদের বেতন গড়পড়তায় ৪৫,৭৫৫ মার্কিন ডলার(বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৩৬ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা); মাসিক হিসাবে তিন লক্ষ টাকার চেয়েও বেশি।।দক্ষিণ কোরিয়া,যুক্তরাস্ট্, জার্মানী এবং জাপানে শিক্ষকদের বেতন ৪০,০০০ মার্কিন ডলারের (বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা) চেয়ে বেশী,যা মাসিক হিসাবে প্রায় ২ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা।আর বৃটেনে শিক্ষকরা পান ৩৩,৩৭৭ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২৬ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা); মাসিক হিসাবে প্রায় ২ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা। ।
আমাদের সমমনা দেশের তুলনায় এদেশের শিক্ষকদের বেতন ভাতা একেবারেই নগন্য। এদেশে শিক্ষকদের তেমন মর্যাদার চোখে দেখা হয় না। বিসিএস ক্যাডার একজন কর্মকর্তা যে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন তার সমমর্যাদার একজন শিক্ষক সে সুযোগ সুবিধার ধারেকাছেও যেতে পারেন না। এমপিওভূক্ত স্কুল কলেজের শিক্ষকরা পরিবার পরিজন নিয়ে মাছ-গোশ না খেতে পারলেও অন্ততপক্ষে দুমুঠো ডাল ভাত খেতে পারেন কিন্তু প্রাইভেট স্কুল কলেজের শিক্ষকদের সে সৌভাগ্যও হয়না।
শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল যুগের উপযুক্ত করে গড়তে চাইলে শিক্ষকদের সম্মানীর ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন জরুরি। বৈদিক যুগের গুরু-দক্ষিণা ভিক্ষাবৃত্তি দ্বারা শিক্ষকের জীবন নির্বাহ অথবা পাল যুগের বিহারগুলোয় থাকা খাওয়ার বিনিময়ে ছাত্র পড়ানোর ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এখনও বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষকই বৈদিক যুগের মতো গুরু-দক্ষিণা নিয়ে অথবা পাল যুগের মতো লজিং থেকে ছাত্র পড়ান। আর যারা সরকারি বেতন পান, তাদের অবস্থাও খুব ভালো, এমন নয়।
সম্মানজনক সম্মানী না পেলেও কোনও সময়ই শিক্ষকদের সম্মানের কমতি হয়নি। প্রায় সব যুগেই শিক্ষকতা মহান পেশা হিসেবে পেয়েছে স্বীকৃতি। এই ডিজিটাল যুগে এসে অবশ্য শুধু সম্মান দিয়ে শিক্ষকদের সংসার আর চলছে না। সারা মাস দোকান থেকে বাকি নেওয়ার পর অথবা মাস শেষে বাড়ি ভাড়া দেওয়ার মতো যখন পর্যাপ্ত অর্থ থাকে না; তখন একজন শিক্ষকের সম্মান অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত দোকানদার আর বাড়িওয়ালার কাছে বানের পানির মতো ভেসে যায়। তাদের অকথ্য গালিগালাজ আর কটু কথায় শিক্ষকের সম্মান জানালা দিয়ে পালায়।
অবহেলিত বেসরকারী শিক্ষকরা: দেশে বর্তমানে সরকারি হাইস্কুল মাত্র ৩৩৫টি। আর বেসরকারি হাইস্কুল ১৬ হাজার ১০৯টি। সরকারি কলেজ মাত্র ২৭৪টি। আর বেসরকারি কলেজ দুই হাজার ২৬২টি। সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাত্র চারটি। আর বেসরকারি মাদ্রাসা সাত হাজার ৫৯৮টি। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৪২টি। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১০৪টি। সঙ্গত কারণেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা স্তরের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই পড়াশোনা করেন। উচ্চ মাধ্যমিকের মাত্র ২% প্রতিষ্ঠান সরকারি আর বাকি ৯৮% প্রতিষ্ঠান বেসরকারি।সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট।সরকারি শিক্ষকরা জাতীয় বেতন স্কেলের মূল বেতনের পাশাপাশি ৫% বার্ষিক বৃদ্ধি,মূল বেতনের ৪৫-৫০% বাড়িভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা, মূল বেতনের ১০০% হারে দু’টি উৎসব ভাতা, বৈশাখী ভাতা, শ্রান্তি বিনোদন ভাতা, শিক্ষা ভাতা, টিফিন ভাতা , বদলি সহ নানাবিধ সুবিধা পেয়ে থাকেন।
পক্ষান্তরে, ৯৮% শিক্ষার ভার যাদের উপর নিপতিত,সেই বেসরকারি শিক্ষকরা উপর্যুক্ত সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত। প্রিন্সিপাল থেকে দপ্তরী পর্যন্ত সবার বাড়িভাড়া মাত্র ১০০০ টাকা, বর্তমান বাজারে যা দিয়ে একটি কুড়ে ঘরে থাকাও দুস্কর।চিকিৎসা ভাতা মাত্র ৫০০ টাকা,অথচ একজন ডাক্তারের একবারের ভিজিট ও তার চেয়ে বেশী।মূল বেতনের ২৫% বোনাস, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক যে, একজন শিক্ষককে নিজের ও নিজের পরিবার ও আত্নীয় স্বজনের চাওয়া মেটাতে না পেরে তাদের কাছে লজ্জিত হওয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকেনা।
প্রাইভেট স্কুল কলেজের শিক্ষকদের দুরবস্থা:করোনা মহামারির কারনে ব্যক্তিমালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। জাতীয় পত্রিকার সূত্রমতে,কুমিল্লার একটি প্রাইভেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক গরুর রাখালের চাকুরী করছেন। এসব শিক্ষকদের কাছে শিক্ষক নামটি এখন আযাবে পরিণত হয়েছে। মজদুরের কাজ সহ এমন কোনো নিচু কাজ নেই যা প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষকরা করেনি।
ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের করুণ কাহিনী: শিক্ষকদের মধ্যে সবচেয়ে করুণ অবস্থায় রয়েছেন স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা। তারা প্রত্যেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ১৯৯৪ সালে পরিপত্রে রেজিস্টার বেসরকারি প্রাইমারি ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি মহাজোট সরকার ২৬১৯৩ টি বেসরকারি প্রইমারি স্কুল জাতীয়করণ করলেও একটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসাকে জাতীয়করণ করেনি। দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে তারা বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত। সারাদেশের প্রায় ১০ হাজার মাদ্রাসার মধ্যে মাত্র ১ হাজার ৫১৯টি মাদ্রাসার ৪ জন করে শিক্ষক সরকার থেকে ২৩০০ টাকা করে ভাতা পান। আর প্রধান শিক্ষকদের ভাতা ২৫০০ টাকা। তাও পান তিন মাস পর পর । যা দৈনিক ১০০টাকারও কম। স্বাধীনতার 50 বছর পরেও প্রাথমিকের শিক্ষকদের সাথে এবতেদায়ী শিক্ষকদের এই বৈষম্য জাতির জন্য লজ্জাকর।প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চেয়ে তুলনামূলক ইবতেদায়ির শিক্ষকরা অনেক বেশি কষ্ট করেন। তারা পাঠ্যবইয়ে জেনারেলের পাশাপাশি আরবি বিষয়ক বইও পড়ান। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ দরকার।
শিক্ষাকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে হবে:সম্পতি সময়ে টিআইবি তাদের গবেষণায় ভয়ঙ্কর তথ্য তুলে ধরছে-সংস্থাটির মতে, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশ করা সহকারী শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়। আর সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগে ২ থেকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়।এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (স্কুল ও কলেজ) অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্য চলছে । প্রতিষ্ঠানটির এক গবেষণায়, নিয়োগে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেন হওয়ার তথ্য উঠে এসেছে।বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য সাড়ে তিন লাখ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশে শিক্ষকরা নানাবিধ সংকটের মুখে। এভাবে চলতে থাকলে মেধারীরা এ পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে- যার প্রভাব হবে ভয়ংকর রকমের খারাপ। শিক্ষকদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও অবস্থাণ সুনিশ্চত হোক, তাদের সুযোগসুবিধা ও ক্ষমতায়নের বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পাক এটাই কাম্য।
সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হোক: আজ দেশ যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং একটি মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে,পদ্মা সেতুর মত দুঃসাহসিক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে , ঠিক তেমনি মুহুর্তে জাতির মেরুদন্ড গড়ে দেওয়ার কারিগর শিক্ষকদের এ দুরবস্থার অবসান কল্পে এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হোক।স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুও শিক্ষকদের শিক্ষকদের যথেষ্ঠ মূল্যায়ণ করতেন। দেশ পুনর্গঠনে তিনি দেশবিদেশে উচ্চতর ডিগ্রিধারী শিক্ষকদেরকে সরাসরি উচ্চপদে( ২০% ) নিয়োগের ব্যবস্থা করেছিলেন(যা পরবর্তীকালে ১০% হয়), দুজন শিক্ষাবিদকে তিনি শিক্ষা সচিব পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে শিক্ষকদেরকে মর্যাদার আসনে বসানোর সে ধারা আর অব্যাহত থাকেনি। বঙ্গবন্ধুর আদশের সরকার এখন ক্ষমতায়।
সুতরাং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুল আবেদন দ্রুত সময়ের মধ্যে শতভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারী করণ করা হোক। পাশাপাশি বর্তমানে সক্রিয় শিক্ষক সংগঠনগুলো যে সমস্ত দাবি উত্থাপন করছে তা বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করার আহ্বান জানাচ্ছি। বিশেষ ভাবে অগ্রাধিকার বিবেচনায় যে সমস্ত দাবিগুলো বেশি বেশি আলোচিত হচ্ছে তা হলো:
১। শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ কিন্তু বিক্ষিপ্ত জাতীয়করণ নয়।
২। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর দ্রুত বাস্তবায়ন।
৩। ইউনেস্কো ও জাতিসংঘের সুপারিশ মতে শিক্ষাখাতে জিডিপি-এর ৬% বরাদ্দ রাখতে হবে।
৪। বাংলা নববর্ষের উৎসব ভাতা ও বার্ষিক পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দিতে হবে।
৫। নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারিদের এমপিওভুক্ত করতে হবে।
৬। অবসর তহবিল ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা দ্রুততার সঙ্গে প্রদান করতে হবে।
৭। সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে কুখ্যাত অনুপাত প্রথা বাতিল করতে হবে।
৮। সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদ সৃষ্টি করে পদোন্নতি দিতে হবে।
৯। ৮ম পে স্কেল অনুযায়ী সরকারি শিক্ষক-কর্মচারিদের ন্যায় সিলেকশন গ্রেড প্রদান করতে হবে।
১০। মাধ্যমিক স্তরে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক পদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
১১। সহকারী শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেড দিতে হবে।
১২। বেসরকারি স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারিদের বেতন জীবনমান ভিত্তিক হতে হবে।
১৩। সকল স্তরে শিক্ষার বাণিজ্যিকরণ বন্ধ করতে হবে।
১৪। শিক্ষকদের দক্ষতা ও পাঠদান কৌশল দক্ষতা বাড়ানোর জন্য উন্নত প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
১৫। শিক্ষা বিনিময় কর্মসূচির আলোকে বিদেশে প্রশিক্ষণের সুযোগ বেসরকারিদের জন্যও উন্মুক্ত করতে হবে।
শিক্ষকগণ হচ্ছেন জাতির বিবেক ও মূল্যবোধ সংরক্ষণের ধারক ও বাহক। শিক্ষার সংস্কার, সম্প্রসারণ ও মান উন্নয়নে সরকার বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিবেন বলে শিক্ষক সমাজ প্রত্যাশা করে। বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সরকারের পক্ষ থেকে কোন গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচী না নেয়ায় শিক্ষক সমাজ আশাহত হয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করি ভবিষ্যতে সরকার এ বিষয়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্রহণ করে শিক্ষক সমাজকে যথাযথ সম্মান দেখা
লেখক:
সাংগঠনিক সম্পাদক
জাতীয় শিক্ষক ফোরাম