ব্রেকিং নিউজ

ডুমুরিয়ায় সদ্য নির্মিত পীচ ঢালা সড়ক ফুঁড়ে গজাচ্ছে ঘাস,ধ্বসে পড়েছে

খুলনা প্রতিনিধি
খুলনা ডুমুরিয়ার রোস্তমপুর গ্রামে এক কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সদ্য নির্মিত পৌনে ২ কিলোমিটার সড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করার মাত্র ৭দিনেই ঘাস জন্মেছে। আর দু’দিনের বৃষ্টিতেই সড়কে পাশ ধসে পড়েছে।
স্থাণীয়রা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। এমনকি ঠিকাদার শ্রমিকের টাকাও পরিশোধ করেনি। ঠিকাদার বলছে ঘাস জন্মানোর বিষয়টি সাংবাদিকদের কারসাজি। আর উপজেলা প্রকৌশলী জানালেন পাথরের নীচে ঘাসের বীজ থাকলে ঘাস জন্মাতে পারে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা ও যশোর জেলার কেশবপুর সীমান্তবর্তি রোস্তমপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা গ্রাম্য একটি সড়ক ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়নের কাজ করে। শুরুতে নিম্মমানের খোয়া ইট ব্যবহার করা হয়। এলাকাবাসী বাঁধা দিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। এরই মধ্যে বিগত অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই ঠিকাদার নামমাত্র পাথরের খোয়া ও বিটুমিন ব্যবহার করে রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করে। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই কার্পেটিং ভেদ করে ঘাস জন্মেছে। তাছাড়া রাস্তার পাশে প্রয়োজনীয় মাটি না দেয়া বিভিন্ন স্থানে ধসে পড়েছে। সাতক্ষীরা-যশোর সড়কের চুকনগর বাজার পার হলেই চুকনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। এর কিছুটা পশ্চিম দিকে গিয়ে মহাসড় থেকে উত্তরে চলে গেছে চুকনগর টু রোস্তমপুর সড়ক। মাটির কাঁচা গ্রাম্য সড়কটি পাকা করার এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ চন্দ’র চেষ্টায় ওই সড়কটি পীচ ঢালা কার্পেটিং সড়ক নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ৭০০ মিটার দৈর্ঘের কাজটি পায় জনৈক ইকবাল হোসেন জমাদ্দার নামে এক ঠিকাদার।
স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করে জানালেন, সড়কটি নির্মার্ণের শুরুতে নিম্মমানের ইট ও ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ধূলা বালির পরিবর্তে কর্দমাক্ত বালি ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘদিন খোয়া বসিয়ে সড়কটি ফেলে রাখা হলেও হঠাৎ করে জুন মাসে শেষ হয়ে আসায় তড়িঘড়ি করে ব্যাপক অনিয়মের মধ্য দিয়ে রাস্তার কার্পেটিং করা হয়। কার্পেটিংয়ের পূর্বে খোয়ার উপরে বিটুমিন দেয়া হয়নি। বালির উপরেই নামকাওয়াস্তে পাথরের খোয়া পীচ দিয়ে রোলার দেয়া হয়েছে। যা পা বা হাত দিয়ে চাপ দিলে ভেঙ্গে গুড়ো হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া সড়কের পাশে হেরিং বোন দেয়া ইটের পাশে মাটি না দেয়ায় বিভিন্ন স্থানে ধসে পড়েছে।
রোস্তমপুর গ্রামের শংকর ঘোষ, হাতেম আলি মোড়ল, শ্যামল মন্ডল আজাহারুল ইসলামসহ স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন,সপ্তাহ খানেক আগে ঠিকাদার রাস্তায় পীচ দিয়ে গেছে। এরই মধ্যে পীচ ফুড়ে ঘাস উঠেছে। আটলিয়া ইউনিয়নের রোস্তমপুর ওয়ার্ড শাখা আ’লীগ সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম বললেন, প্রশাসনের লোকজনেরা সঠিকভাবে কাজের তদারকি করেনি। ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ার অফিসের লোকজনের যোগসাজসে সরকারের উন্নয়ন মূলক কাজে নয়ছয় হয়। এই রাস্তার কাজে শুরুতেই ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে।কাজের ঠিকাদার ইকবাল হোসেন জমাদ্দার জানালেন, ঘাস গজানোর তথ্য সঠিক নয় এটি সাংবাদিকদের কারসাজি। তিনি বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে কয়েকটি স্থানে ধসে পড়েছে তা অবশ্য ঠিক। বৃষ্টি থেমে গেছে এখন ঠিক করে দেয়া হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, পাথরের নীচে ঘাসের বীজ থাকলে সেটি কার্পেটিং ভেদ করে জন্মাতে পারে। যানবাহন চলাচল করলে ঘাস মরে যাবে। তিনি বলেন, সড়কের কাজ সিডিউল অনুযায়ি ঠিকাদারকে শেষ করতে হবে। কোন অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.