সেলিম আবেদ, খুলনা প্রতিনিধি
ঠিকাদারের গাফিলতিতে গত ৩ বছর ধরে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বালিয়াখালি মোড় থেকে থুকড়া বাজার পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার রাস্তা পাকা-করণ শেষ হচ্ছে না। তার মধ্যে প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তায় বালু ফেলার জন্য রাস্তা কেটে রাখা’য় পানি জমে চলাচল সম্পূর্ণ থমকে পড়েছে। ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার বালিয়াখালি মোড় থেকে হাসানপুর বাজার হয়ে থুকড়া বাজার পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৮.৩২৫ কিলোমিটার রাস্তা পাকা-করার জন্য ২টি প্যাকেজে কাজ দেওয়া হয়। ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর ‘ঝর্ণা এ্যান্ড আশরাফ এন্টারপ্রাইজ’কে বালিয়াখালি থেকে প্রথম ৪ কিলোমিটার রাস্তা ৩ কোটি ৪০ লাখ ও পরের ৪.৩২৫ কিলোমিটার রাস্তা ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকার চুক্তিতে ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবরের মধ্যে কাজটি শেষ করতে আদেশ দেওয়া হয়। এখানে উল্লেখ্য, ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামের আড়ালে ডুমুরিয়া উপজেলার এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি কাজটির নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়ে শুরু করতেই ১ বছর পার করে দেন। তারপর প্রকৌশলীর অনুরোধে কিছু কাজ করেন, আবার থেমে যান। এভাবে চলতে চলতে আরও ২ বছর পার হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে বালিয়াখালি থেকে ৬ কিলোমিটার রাস্তায় ইটের খোয়া-বালি ফেলে রুলার দিয়ে পিচ ঢালার উপযোগী করা হয়েছে। কিন্ত ১ বছরের অধিক সময় ধরে পিচ না দেওয়ায় সেখানে কাদা-বালি জমে ঘাস গজিয়েছে। আর মরণতলা থেকে বিলপাটিয়ালা মোড় পর্যন্ত আধা কিলোমিটার রাস্তায় বালু ফেলার জন্য রাস্তা কেটে রাখা’য় গত ৭ মাস ধরে বর্ষার পানি-কাদা জমে সম্পূর্ণ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আর সেখান থেকে থুকড়া পর্যন্ত আরও দেড় কিলোমিটার পুরাতন রাস্তায় বিগত ৩ বছরে হাতও দেওয়া হয়নি। ফলে ওই এলাকার সর্বস্তরের মানুষ চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে মরণতলা এলাকার বাসিন্দা আলতাপ গাজী বলেন, রাস্তা খোচার পরে সারা বর্ষাকাল ধরে আমারা আসা-যাওয়া কত্তি পারতিছিনে। ইটভাটা সর্দার সিদ্দিক সানা বলেন, খুচে রাখার কারণে অনেক পথ ঘুরে ইটভাটার গাড়ি যাতায়াত কত্তেছে। জাফর গাজী বলেন, এই বিলিত্তে ধান কাটে বাড়ি নিতি ভ্যানে ৫০০ টাকা ভাড়া, কিন্তু রাস্তার কারণে ১ হাজার টাকা দিতি হয়ছে। তালি বোঝেন, কেমন সমস্যায় আছি। শরিফুল ইসলাম বলেন, ৭-৮ মাস আগে রাস্তা খুড়ে ফেলে রাখেছে, বালি দিলিউ তো চলতি পাত্তাম। সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি মেম্বর আল-আমিন বিশ্বাস বলেন, এই রাস্তা দিয়ে আমাগে এলাকার ’শ ’শ মানুষ প্রতিদিন বিলিত্তে মাছ-সাক আনা-নেওয়া ও থুকড়া বা ডুমুরিয়া সদরে যাতায়াতেও চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
এই রাস্তার কাজের ঠিকাদার আসলাম খান দায়িত্ব এড়িয়ে বলেন, কাজটি আমার নাম হলেও করতেছে অন্যলোকে। তারা কেনো দেরি করছে আমি খোঁজ নিবো। তবে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম ঠিকাদারের গাফিলতির কথা উল্লেখ করে বলেন, তাকে যখন চাপ দেই, তখন কিছু কাজ করে, আবার থেমে যায়। কাজটি শেষ করতে আমি ইতোমধ্যে বেশ-কয়েকবার লিখিত-মৌখিক ভাবে সতর্ক করেছি। তবে দ্রুত শেষ না করলে কার্যাদেশ বাতিলের ব্যবস্থা করবো। ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে আমি জানলাম। এটা আমি তদারকি করবো। এবং দ্রুত শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ হেলাল উদ্দিন © সর্বস্বত্ত সংরক্ষিত
Copyright © 2023 স্বাধীন বাংলা নিউজ | তথ্য মন্ত্রনালয় নিবন্ধন নং-১৭৯