যে বই লিখে আত্মতৃপ্তি পেয়েছিলেন ফকির আলমগীর
কথায় আছে “ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে।” লেখক কবি সাহিত্যিকরা ধরার বুকে যেখানেই যাক না কেন কিছু না কিছু তাদের লিখতেই হবে ; কবিতা, গান, সংগীত বলতেই হবে। একজন সফল লেখক ও গণসংগীত শিল্পী হিসেবে ফকির আলমগীরও তার বাহিরে ছিলেন না।
২০২০ সালে বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে তিনি হজে গিয়েছিলেন। রাতে আরাফাতের তাবুতে বসে নবীজিকে নিয়ে একটি ইসলামী সংগীত গেয়েছিলেন। তার সংগীতটি দেশ-বিদেশে ভক্ত কুলের নিকট ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল। তিনি তখনই নিয়ত করেছিলেন দেশে ফিরে হজ এবং ওমরা সম্পর্কে একটি বই লিখবেন। ফকির আলমগীরের লেখনির সংখ্যা প্রায় শতাধিক।
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ শেষ জীবনে বিশ্বনবীর জীবনী লেখা শুরু করেছিলেন কিন্তু শেষ করে যেতে পারেননি। ফকির আলমগীর হজব্রত পালন করে এসেই বলেছিলেন, আমি হজ সম্পর্কে একটি বই লিখবো। আমার মৃত্যুর আগে যেন আল্লাহ বইটি শেষ করার তৌফিক দান করেন। আল্লাহপাক ওনার সে কথাকে কবুল করেছেন। মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন আগেই বইটি প্রকাশিত হয়েছে।
পেশাগত কাজের পাশাপাশি ধর্ম তাঁর জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। ওনার দাদা ছিলেন ফরায়েজী আন্দোলনের নেতা হাজী শরীয়ত উল্লাহর খলিফা। সেই সূত্র ধরে পারিবারিকভাবেই তাঁরা সবাই ধর্ম-কর্ম মানতেন এবং ধর্মীয় বিধিবিধানকে শ্রদ্ধা জানাতেন। নিয়মিত নামাজ পড়ার পাশাপাশি কুরআন তেলাওয়াতও করতেন। খিলগাঁওয়ের বি-ব্লকের মাটির মসজিদের বিল্ডিং নির্মাণে তাঁর ভূমিকা আজও সবাই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। ঈদ – কুরবানীতে লুঙ্গি এবং শাড়ি নিয়ে গ্রামে গিয়ে গরীবদের বিরতণ করতেন। পারিবারিব সূত্রমতে, মৃত্যুর কিছু দিন আগে থেকেই তিনি বলতেন, আমি মসজিদে নবনীর ঘ্রাণ পাচ্ছি।
অবসর সময়ে আমার সাথে বিভিন্ন গল্প করতেন, জীবনের ইতিহাস শুনাতেন। অনেক বাস্তবমুখী কথা বলতেন।
আল্লাহ পাক এই বীর মুক্তিযোদ্ধকে সকল ভালো কাজগুলোর উছিলায় মাফ করে দিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন। আমীন!
(লিখেছেন :ইশতিয়াক মু. আলামিন
বার্তা সম্পাদক, স্বাধীন বাংলা নিউজ)