পাথরঘাটায় সাংবাদিককে হুমকি, থানায় জিডি

মোঃ মহিবুল ইসলাম, পাথরঘাটা (বরগুনা):

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া ইউনিয়নের ১৪৩ নম্বর মানিকখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের অভিযোগের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিক তাওহীদুল ইসলাম শুভকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ মেহেদী হাসান। এ ঘটনায় পাথরঘাটা প্রেস ক্লাবে জরুরি সভা ডেকে সাংবাদিকরা নিন্দা প্রকাশ করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সাংবাদিক তাওহীদ শুভ আরটিভির পাথরঘাটা প্রতিনিধি।

তাওহীদুল ইসলাম শুভ জানান, প্রধান শিক্ষক হারুন-অর রশিদ মাসে দু-একদিন বিদ্যালয়ে আসেন, তখন হাজিরা খাতায় পুরো মাসের স্বাক্ষর দিয়ে চলে যান। এ ছাড়াও নিয়মিত পাঁচজন শিক্ষক উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও ২ জন পালাক্রমে উপস্থিত থাকেন। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে গত ৭ অক্টোবর সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় সরেজমিন গিয়ে সত্যতা পাওয়া যায়।

সাংবাদিক শুভ জানান, এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক হারুন-অর রশিদের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে আমাকে বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। নাহলে অনুমতি না নেওয়ার কারণে মামলা দেবেন বলেও জানান তিনি। পরবর্তীতে ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং নিউজ করলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

শুভ আরও জানান, প্রধান শিক্ষক হারুন-অর রশিদের এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং শিক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্য আনার পর থেকে পুনরায় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে নিউজ বন্ধ করতে চাপ প্রদান করে।

এ ঘটনায় পাথরঘাটা প্রেস ক্লাব নিন্দা জানিয়েছে। প্রেস ক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী ঘটনার বলেন, একজন সংবাদ কর্মী তথ্যের প্রয়োজনে সর্বত্র যাবে। সেজন্য তাকে প্রা নাশের হুমকি দেবে এটা মানা যায় না। আমি ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ‌

এ বিদ্যালয়ের তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মা মণি বেগম জানান, আশেপাশে কোন স্কুল না থাকায় বাধ্য হয়ে এ স্কুলে আমার এক ছেলে ও মেয়েকে পড়াচ্ছি। তবে এখানে পড়ালেখার কোনো মান নেই। শিক্ষকরা স্কুলটা বাড়ি বানিয়ে ফেলেছে।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদের নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ জানান, আমি এখনও কিছু শুনিনি। তবে সাংবাদিককে তথ্য চাইতে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি পাবে, এটা মানা যায় না। এ রকম কিছু করে থাকলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নি নেব।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ মেহেদী হাসান জানান, তাওহীদুল ইসলাম শুভ পাথরঘাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সাধারণ ডায়রির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান খান বলেন, সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি জেনেছি। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.