বিশ্বনাথে ২০৪ বস্তা ভারতীয় চিনি সহ গ্রেপ্তার- ১

সিলেট: সিলেটের বিশ্বনাথে ২০৪ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ এক জনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। সেইসাথে একটি কার্গো কাভার্ড ভ্যান ও একটি পিকআপ ভ্যান আটক করেছে তারা।

আজ রাত সাড়ে ১১টায় উপজেলার শিমুলতলার মোরা বাজার এলাকা থেকে চিনির বস্তাগুলো জব্দ করা হয়।

আটক পিকআপ চালক রুমান আহমদ (২৪) উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের দশদল গ্রামের জোনাব আলীর ছেলে। এ সময় অন্য চোরাকারবারিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হওয়ায় তাদের আটক করতে পারেনি পুলিশ। তবে, একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, এই চিনিকান্ডের সাথে জড়িত খোদ বিশ্বনাথ থানার কতিপয় অসৎ পুলিশ সদস্যরাই।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জব্দ হওয়া এ ভারতীয় এ চিনির মালিক দাবিদার সিলেটের জৈন্তা উপজেলার জনৈক ব্যবসায়ী সালাহ উদ্দিন। তিনি তামাবিল বর্ডারের বিজিবি থেকে নিলামে নিয়ে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের কার্গো ভ্যানে (ঢাকা মেট্টো-উ-১৪-০৭৬২) এসব চিনি রংপুরের উদ্দেশ্যে পাঠাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে নবীগঞ্জের আউশকান্দি এলাকায় ছিনতাইকারিরা চিনিসহ গাড়ীটি ছিনতাই করে বিশ্বনাথ থানা এলাকায় নিয়ে আসে। পরে, রাতে কার্গো ভ্যান থেকে চিনি অনত্র সরিয়ে নিতে পিকআপ ভ্যানে (সিলেট মেট্টো-ন-১১-০৫৫১) আনলোড করার সময় পুুলিশ হানা দেয়। এ সময় দুই গাড়ী মিলিয়ে ১৬৮ বস্তা চিনি জব্দ করা হয়। আটক করা হয় ভ্যান চালক রুমানকে। পরে অভিযান চালিয়ে জানাইয়া গ্রামের একটি বাড়ি থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় আরও ৩৬ বস্তা চিনি জব্দ করে পুলিশ। যার বাজার মূল্য ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৮শ টাকা প্রায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বিশ্বনাথ রুটের চিনিচক্রের হোতা বিশ্বনাথ থানার সাবেক পুলিশ কনস্টেবল শামসুুল ওরফে শামসু (বর্তমানে পার্শ্ববর্তী ওসমানীনগর থানায় কর্মরত) ও এসআই আবু সালেহ। এ কাজে প্রসিদ্ধ কনস্টেবল শামসুলই ম্যানেজ করেন সব। চিনি কান্ডে জড়িয়ে অঢেল সম্পদ কামিয়েছেন তিনি। গত রাতে তারাই মূলত এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিষয়টি স্থানীয় একজন সাংবাদিকের মাধ্যমে ধরিয়ে দেয়ায় তারা জানাইয়া গ্রামের আসক আলী নামের এক ব্যক্তিকে ফাঁসিয়েছেন। তার বাড়ি থেকেও চিনি উদ্ধার দেখিয়েছেন।

আসক আলী জানান, ‘চিনি ছিনতাই করে সরিয়ে নেয়ার খবর জানতে পেরে প্রথমে আমি একজন সাংবাদিককে জানাই। বিষয়টি জানতে পেরে থানার দারোগা আবু সালেহ আমার সাথে রফা করার জন্য বসতে চান। এ নিয়ে অপারগতা প্রকাশ করি আমি। এক পর্যায়ে পুলিশ এসে চিনি জব্দ করে। আমি বিষয়টি ধরিয়ে দেয়ার কারণে আবু সালেহ আমার বাড়িতে লোক দিয়ে চোরাই চিনি রেখে উদ্ধার দেখান। তিনি আমাকে ফাঁসানোর অপ্রচেষ্টায় আছেন। আমি সকলের সহযোগিতা চাই।’

অভিযুক্ত এসআই আবু সালেহ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ও আমার টিমের মাধ্যমেই চোরাই চিনি উদ্ধার হয়েছে। তাহলে আমার সম্পৃক্ততা থাকে কি করে? জানাইয়া গ্রামে চিনি আনলোডের খবর পেয়ে আমরা গিয়ে উদ্ধার করে আনি। যিনি অভিযোগ তুলেছেন, তার বাড়ি থেকেও চিনি উদ্ধার হয়েছে। সেটার কি হবে?

এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুবেল মিয়া বলেন, ‘চিনিসহ দুুটি গাড়ী জব্দ ও একজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে এর সাথে জড়িতদের বের করা হবে।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.