বিশ্বনাথে আওয়ামীলীগ অনুসারী শিক্ষদের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল রাজপথ
বিশ্বনাথ(সিলেট)প্রতিনিধি :
‘লেগেছে রে, লেগেছে-রক্তে আগুন লেগেছে’ রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়”
রাজপথে আছি, রাজপথেই থাকবো – দুর্নীতির কালো হাত, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও”
“আওয়ামীলীগের দালাল রা হুশিয়ার সাবধান ” ইত্যাদি শ্রুতিমধুর ও তেজ্বসী কিংবা ‘এক দফা এক দাবী-প্রধান শিক্ষক তুই কবে যাবি’। ছাত্র-ছাত্রীদের এমন এমন গরম গরম শ্লোগানে, হাততালিতে সিলেটের বিশ্বনাথ প্রায় প্রতিদিন উত্তাল হয়ে উঠে।
উপজেলার ৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।
নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
ছাত্রসংসদ নেতৃবৃন্দ ও ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা আওয়ামীলীগ অনুসারী দুর্নীতিগ্রস্থ “হাসিনালীগের ”
প্রধান শিক্ষক অধ্যাক্ষ, সহ
বিগত ১৬ বছর শিক্ষার্থীদের
উপর জুলুম নির্যাতন করে আসা এজেন্ট মাষ্টারদের ধরে ধরে বহিস্কার ঘোষনা করে ছাত্র আন্দোলনের শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
এনিয়ে বিশ্বনাথে দিনভর প্রতিদিন চলছে টানটান উত্তেজনা। এমন পরিস্থিতিতে অভিভাবক মহলেও বেড়ে গেছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা।
সাম্প্রতিক সময়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সারাদেশ ছিল উত্তাল। ৯ দফার আন্দোলন অবশেষে পরিণত হয় ১ দফার আন্দোলনে। পৃথিবীর ইতিহসে সবচেয়ে দ্রত সময়ের মধ্যে পতন হয় বাকশাল হাসিনালীগ সরকারের।
এরপর সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদত্যাগের দাবির হিড়িক পড়ে।
এর প্রভাব পড়েছে প্রবাসী অধ্যূষিত বিশ্বনাথ উপজেলায়ও।
সম্প্রতি উপজেলার বিশঘর আনরপুর প্রগতি উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তর বিশ্বনাথ দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়, বিশ্বনাথ দারুল উলুম ইসলামীয়া কামিল মাদ্রাসা ও এলাহাবাদ আলিম মাদ্রাসা প্রধানের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে ছাত্র-জনতা।
রবিবার উপজেলার ৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলা সদরে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সম্মুখে পৃথক পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।
সকাল ৮ টায় থেকে প্রগতি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
সন্ধা ৮ পযন্ত বিশ্বনাথ উপজেলা কর্মকর্তার কার্যালয়ে অবস্থান মিছিল কর্মসূচী পালন করে নিজ স্কু্লের প্রধান শিক্ষক ” সিলেট আওয়ামী পেশাজীবি লীগের সদস্য ফারুক ইকবালের পদত্যাগের দাবিতে।
সকাল ৯টায় বিশ্বনাথ দারুল উলুম ইসলামীয়া কামিল মাদ্রাসার সম্মুখ থেকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মাওলানা নো’মান আহমদের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-জনতা ও বেলা ১১টায় হাজী মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নেহারুন নেছার পদত্যাগের দাবিতে প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীরা বিভোক্ষ মিছিল সহকারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসে।
উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করে। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিশ্বনাথ দারুল উলুম ইসলামীয়া কামিল মাদ্রাসায় এসে তালাবদ্ধ করে বন্ধ করে দেয় এবং তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মাদ্রাসার কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষনা দেয়।
অন্যদিকে সকাল থেকে বিশ্বনাথের রামপাশা ইউনিয়নের আমতৈলস্থ পঞ্চগ্রাম দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা রায়হান উদ্দিনের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয় ছাত্র-জনতা। গতকাল ও আজ দিনভর মিছিলে মিছিলে উত্তাল ছিল বিশ্বনাথ।
বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানাগেছে, ২টি প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদত্যাগের দাবিতে দুটি স্মারকলিপি দাখিল করা হয়েছে এবং সেগুলো সংশ্লিষ্ঠদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।
হাজী মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেত্রী নেহারুন নেছা বলেন, কেউ আমার বিরুদ্ধে দূর্নীতি প্রমাণ করতে পারবেনা। আমি শতভাগ স্বচ্ছ আছি। আমার বিরুদ্ধে যারা বিক্ষোভ করেছে তারা শিক্ষার্থী কিনা এটা সবার দেখা উচিত। যারা বিক্ষোভ করেছে তাদের অধিকাংশই বয়স্ক মহিলা ও পুরুষ। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি। বিচারের ভার আমি বিশ্বনাথবাসি ও দেশবাসীর দিলাম।
বিশ্বনাথ আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নোমান আহমদ বলেন, বহিরাগতদের নিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিছিল করানো হচ্ছে। ভাইরাল অডিও তার প্রমাণ। আমি একটি স্বার্থনেষী মহলের কাছে ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। ইতিমধ্যে নিরাপত্তাহীনতার কারণে আমি থানায় একটি জিডি এন্টি করেছি। তার প্রতিকার না পেলে আমি আইনী সহায়তা চাইব।