আফরোজা আক্তার মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
গেল ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জ শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া শহরের উত্তর ইসলামপুরের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ ওরফে ডিপজলকে (২২) গুলি করে হত্যার দায়ে নিহত নুর মোহাম্মদ ওরফে ডিপজলের নানী শেফালি বেগম বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলার আসামী করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান,মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সাংসদ সদস্য মহিউদ্দিন আহম্মেদ, মুন্সীগঞ্জ-২ এর অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমেলী ও মুন্সীগঞ্জ -৩ এর ফয়সাল বিপ্লবসহ আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩১৩ জনের নাম উল্লেখ করা রয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ২০০/৩০০ জনকে।
গুলি করে হত্যার অভিযোগে এনে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয় বলে জানান মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি। মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়-আসামিদের এহেন কাজে কতিপয় দুর্নীতিবাজ ও দলীয় নিয়োগ প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য সহায়তা করে।’
এর আগে গত ২০ আগস্ট একই এলাকার রিয়াজুল ফরাজীকে গুলি করে হত্যার দায়ে মুন্সীগঞ্জ ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লবকে প্রধান আসামি করে ২০৮ জনের নামোল্লেখসহ ৫০৮ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় আরো একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। ওই মামলার বাদী হন আন্দোলনে নিহত রিয়াজুল ফরাজীর স্ত্রী রুমা বেগম।
অন্য একটি সূত্রমতে মামলায় নির্দেশদাতা হিসেবে আসামিরা হলেন, মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমান মহিউদ্দিনের ছোট ভাই সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনিস উজ্জামান, মুন্সীগঞ্জ ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লব (জানুয়ারী ২০২৪-আগস্ট ২৪) ও মৃণাল কান্তি দাস (২০১৪-২০২৩), মুন্সীগঞ্জ ২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, যুবলীগ নেতা জালাল উদ্দিন রুমি রাজন এবং পঞ্চসার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য জাহিদ হাসান।
এছাড়াও উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন- শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মতিন, পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুরুজ মিয়া, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নসিবুল ইসলাম নোবেল, সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাজ্জাত হোসাইন সাগর, সরকারি হরগঙ্গা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নিবির আহমেদ, ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোহেল রানা রানু, ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, পঞ্চসার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য জাহিদ হাসান, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা আব্দুর রহমান জীবনসহ এজাহারনামীয় সর্বমোট ৩১৩ জন।
প্রসঙ্গত; গত ৪ আগস্ট শহরের সুপারমার্কেটে এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে জেলা সদরের চরাঞ্চল থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, তার পুত্র সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লব ও তার স্ত্রী মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার জন্য অস্ত্র-ককটেল নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন ২-৩ হাজার দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারী। আগেরদিনই তারা মোবাইল ফোন ও সাক্ষাৎয়ে এই নির্দেশ পান।
ওইদিনের ঘটনায় ৩ জন নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। এছাড়া অন্তত ৯৫ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন দেড় শতাধিক।
এ জেলায় আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতরা হলেন- রিয়াজুল ফরাজী (৩৮), মো. সজল (৩০) ও ডিপজল (১৯)। নিহতদের মধ্যে রিয়াজুল মৃত কাজী মতিনের ছেলে, সজল আলী আকবরের ছেলে ও ডিপজল সিরাজ সরদারের ছেলে। এরা সকলেই শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা।
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
আফরোজা আক্তার
৩০-০৮-২৪
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ হেলাল উদ্দিন © সর্বস্বত্ত সংরক্ষিত
Copyright © 2023 স্বাধীন বাংলা নিউজ | তথ্য মন্ত্রনালয় নিবন্ধন নং-১৭৯