ব্রেকিং নিউজ

মাছ চাষ করতে না দেয়ায় মারপিট ঘটনায় আহত ৪: অতঃপর পুকুরচুরি

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর বাগমারায় অবৈধভাবে পুকুর ও খাদে মাছ চাষ করতে না দেয়ায় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে পরদিন সকালে জোরপূর্বক প্রায় ৩ লক্ষ টাকার মাছ ধরে বিক্রি করেছেন অভিযুক্তরা।

বুধবার (২৬ জুন) রাত সাড়ে ১১টায় উপজেলার বীরকয়া গ্রামের বটতলা এলাকায় এই মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এবিষয়ে বাগমারা থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী রফাতুল্ল্যা প্রামাণিকের স্ত্রী মোসা. সেলিনা খাতুন (৫২)।

মারপিটের ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন ইসমাইলের ছেলে আলাউদ্দিন (৪৫), বাবুল হোসেন (৪০), মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে মো. ইসমাইল হোসেন (৭০), আলাউদ্দিনের ছেলে মো. রাফি (২০), মো. বাবুল হোসেনের ছেলে মো. সাফিকুল ইসলাম (১৯), শমসের আলীর ছেলে মো. জামাল হোসেন (৩৬), মৃত মেহের আলীর ছেলে মো. লালচান (৩৮), মৃত তায়েজ উদ্দিনের ছেলে মো. মাহাবুর রহমান (৩৪), মৃত কুদি মন্ডলের ছেলে মো. আ. জব্বার (৪২), আলাউদ্দিনের স্ত্রী মোছা. পারুল বিবি (৩৮), মো. বাবুল হোসেনের স্ত্রী মোছা. রুবিনা বিবি (৩৬)।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোগ দখলীয় ২টি পুকুর ও ১টি খাদে ১০ জন ওয়ারিশ দীর্ঘ দিন ভোগ দখল করে মাছ চাষ করছিলেন। অভিযুক্ত ইসমাইলের ছেলে আলাউদ্দিন (৪৫) বাৎসরিক টাকা প্রদান করে মাছ চাষ করছিলেন। ওই পুকুর ও খাদে আলাউদ্দিনের

মাছ চাষাবাদের মেয়াদ ছিল বাংলা ১৪৩০ সালের চৈত্র মাস পর্যন্ত। অভিযুক্ত আলাউদ্দিন ওই পুকুর ও খাদে তাঁর চাষ করা মাছ তুলে নিয়ে শর্ত মোতাবেক পুকুর ও খাদের দখল ছেড়ে দেন। আনুমানিক আড়াই মাস পূর্বে অভিযোগকারী মোসা. সেলিনা খাতুনসহ মো. আ. সাত্তার, মহসিন রেজা, আতাউর রহমান, গয়ের আলী, আবুল খয়ের, আ. সামাদ, আবুল কালাম আজাদ, রাকিবুল ইসলাম, রকি ও লুৎফর রহমান ওই পুকুর ও খাদে নিজস্ব ভাবে মাছ চাষের উদ্দ্যোগ গ্রহণ করে পুকুর ও খাদে মাছ ছেড়ে দেন। অভিযুক্ত আলাউদ্দিনকে পুনরায় চাষাবাদ করতে না দেয়ার রেষারেষিতে মূলত এমন মারপিটের ঘটনা ঘটে।

অভিযোগকারী মোসা. সেলিনা খাতুন বলেন, তাঁকে মাছ চাষ করতে দেয়া হয়েছিল। মাছ চাষ করে মাছ তুলে নেন এবং শর্ত মোতাবেক মেয়াদও শেষ হয়। পরে, সম্মিলিতভাবে আমরা পুকুর ও খাদে মাছ ছেড়ে দেই। পুনরায় মাছ চাষ করতে না দেয়ায় লোকজন ভাড়া করে এনে আলাউদ্দিন লাঠি, লোহার রড, হাসুয়া, জাঠি, হাতুড়ি, ফালা, সাবল নিয়ে বটতলা মোড়ের ওপরে আমার স্বামী মো. রফাতুল্যা, দেবর গয়ের আলী, ছেলে শামীম রেজা ও ভাতিজা জাহাঙ্গীর আলমকে ঘিরে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে। তাঁদেরকে গালমন্দ করিতে বাধা নিষেধ করলে অভিযুক্তরা আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। অভিযুক্তদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে আমার স্বামী, সন্তান, দেবর ও ভাতিজাকে এলোপাতাড়ী মারপিট করে। ফলে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিলা ফুলা জখম হয়।

এমনকি অভিযুক্ত আলাউদ্দিন ও বাবুল হোসেনের হাতে থাকা হাসুয়া দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে স্বামীর মাথার ওপরে বিভিন্ন জায়গায় স্বজোরে কোপ মারে এবং মারাত্মক গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয়। অন্যদিকে ভাড়া করা আ. জব্বার ও লালচানের হাতে থাকা বাঁশের লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার দেবর গয়ের আলীর মাথার ওপরে স্বজোরে আঘাত করে। করিয়া মারাত্মক গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয়। অভিযুক্ত আ. জব্বার ও মাহাবুরের হাতে থাকা হাতুড়ি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ভাতিজা জাহাঙ্গীরের মাথার ওপরে স্বজোরে আঘাত করে মারাত্মক গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয়। বিবাদী সাফিকুল ও রাফিদের হাতে থাকা বাঁশের লাঠি দিয়ে আমার ছেলে শামীম রেজার মাথার ওপরে স্বজোরে আঘাত করে মারাত্মক গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তিতে আমরা নিরূপায় হয়ে জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করি। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। অভিযুক্তদের হাত থেকে আমাদেরকে উদ্ধার করেন। ঘটনার আমার ছেলে সময়  সেলিম রেজা (৩০), এরশাদ আলীর ছেলে মো. আতাবুর রহমান (৪৫), মৃত আব্বাস আলীর ছেলে মো. আ. সাত্তার (৫০), মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে মো.

আ. সামাদ (৫৪) সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

মারপিটের পরও তাঁরা স্বামী, ছেলে, দেবর ও ভাতিজাকে সহ আমাদের পরিবারের লোকজনকে যেকোন সময় একাকী পেলে হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে খুন জখম করবে বলে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে চলে যায়। এরপর সহযোগিতা করে আমার স্বামী, ছেলে, দেবর ও ভাতিজাকে চিকিৎসার জন্য ভ্যানে করে বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি।

এ সম্পর্কে বাগমারা থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। মাছ ধরার বিষয় নিয়ে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। গত রাত থেকে আমাদের পুলিশ সদস্য সেখানেই অবস্থান করেছেন। আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.