যুদ্ধের নামে ফিলিস্তিনিদের জিম্মি করা কখনো সমীচীন নয় : তথ্যমন্ত্রী
ঢাকা: বাংলাদেশ সবসময়ই যুদ্ধ ও হত্যাকান্ডের বিপক্ষে এবং যুদ্ধের নামে ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা কখনো সমীচীন নয়। এটি যুদ্ধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশনেরও পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অর্জন প্রকাশন প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু সংকলন’ ও অনার্য প্রকাশনী প্রকাশিত ‘সুন্দরবনের পেশাজীবী সম্প্রদায়ের সমাজ ও সংস্কৃতি’ দু’টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার মুন্সী জালাল উদ্দিন ও অর্জন প্রকাশনীর সত্তাধিকারী আবু হাশেম মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।
সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘পৃথিবীর যেখানেই হোক, বাংলাদেশ সংঘাতের বিপক্ষে। আমরা সংঘাতময় পৃথিবী চাই না। আমরা শান্তি চাই। ফিলিস্তিন অঞ্চলে আজ বহু বছর ধরে দশকের পর দশক ধরে সংঘাত চলছে এবং ফিলিস্তিনিরা তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জাতিসংঘের বক্তৃতায় ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। আমাদের সরকার সবসময় ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন এবং অনেক সময় আমরা সাহায্য সহযোগিতাও করেছি।’
তিনি বলেন, ‘সেখানে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তাতে ফিলিস্তিন বা ইসরাইল যেখানেই হোক, সাধারণ মানুষের হত্যাকান্ড আমরা সমর্থন করি না। এবং যুদ্ধের নামে গাজা স্ট্রিপে খাদ্য, পানিসহ সমস্ত কিছু সরবরাহ বন্ধ করে ফিলিস্তিনিদের যেভাবে জিম্মি করা হয়েছে, সেটি কখনো সমর্থনযোগ্য নয়। এটি যুদ্ধ সংক্রান্ত যে আন্তর্জাতিক কনভেনশন আছে, সেটির নিয়মনীতিরও পরিপন্থী।’
অপর দিকে মন্থী বলেন আদালত স্বাধীন, বেগম জিয়ার দলীয় মেডিকেল বোর্ড বিএনপির মতো কথা বলছে
বিএনপি সম্প্রতি তাদের কয়েকজন নেতার বিচারে সাজা হওয়ায় আদালতের রায়কে ‘ফরমায়েশি’ বলেছে, এ নিয়ে প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশে আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করে, ফরমায়েশি রায় দেয় না। বিএনপির নেতারা যদি নিম্ন আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট না হন, তাহলে উচ্চ আদালতে যেতে পারেন। আরও দুই স্তর উচ্চ আদালত আছে।’
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেশ-আদালত কোনোটির ওপরেই বিএনপির আস্থা নেই উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম জিয়ার মামলায় একশ’বারের বেশি তারিখ পেছাতে হয়েছে। সে জন্যই তারা এগুলো বলে। দেশে আইন ও আদালত স্বাধীনভাবেই কাজ করে। সে কারণে আওয়ামী লীগ নেতারও বিচার হয়, শাস্তিও হয়।’
সাংবাদিকরা এ সময় ‘বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের মেডিকেল বোর্ডের মতে বেগম জিয়া এতো অসুস্থ যে বাসাতেও যেতে পারবেন না, তাহলে তিনি বিদেশ যাবেন কিভাবে’ এ প্রশ্ন করলে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘আসলে এটি দলীয় মেডিকেল বোর্ড। তারা বিএনপির মতোই কথা বলছে। বেগম জিয়া যাতে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা পান সে জন্য সরকার আন্তরিক এবং যতো ধরণের সহযোগিতা প্রয়োজন সেটি করছে এবং প্রয়োজনে আরও করবে। বাইরের ডাক্তার আনার প্রয়োজন পড়কে তাও তারা আনতে পারেন। এবং আমি মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি, আগের মতো এবারও বেগম জিয়া আগেও যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে যান।’
পদ্মা সেতুর ওপর রেলপথ উদ্বোধন নিয়ে বিএনপির বিরূপ মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা যেমন লজ্জা ভেঙে শেষ পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে উঠেছিল এবারও তাদের ট্রেনে করে পদ্মা সেতু পার হয়ে ফরিদপুর যাওয়ার আহবান জানাই।’ মন্ত্রী এর আগে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা রচিত প্রবন্ধসহ সাহিত্যিক সন্তোষ রায় সম্পাদিত ৩০টি প্রবন্ধসমৃদ্ধ ‘বঙ্গবন্ধু সংকলন’ এবং ড. প্রণব কুমার রায়ের গবেষণাগ্রন্থ ‘সুন্দরবনের পেশাজীবী সম্প্রদায়ের সমাজ ও সংস্কৃতি’ বই দু’টির প্রশংসা করেন এবং গ্রন্থকার ও প্রকাশকদের ধন্যবাদ জানান।