ব্রেকিং নিউজ

“উন্নয়ন দৃশ্যমাণ, এবার হবে কর্মসংস্থান”- মেয়র লিটন

ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী
আগামী ২১ জুন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী ও সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। শনিবার (৩ জুন) সকাল ১১ টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে মিলনায়তনে এবারের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য ভোট প্রার্থনা করেন নগরবাসীর কাছে। সেই সাথে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন।
২০১৮ সিটি নির্বাচনে মেয়র হয়ে বিজয়ী হওয়ার পর তার ব্যাপক উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে নির্বাচনী ইশতেহারের প্রথমেই তিনি ব্যাপক কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব হ্রাস ও উদ্যোক্তা সৃষ্টির বিষয় তুলে ধরেন। এছাড়াও অর্থনৈতিক-সামাজিক-মানবিক শান্তিময় ও সমৃদ্ধ মহানগরী গড়ে তোলা। এই মহানগরীকে সমগ্র বরেন্দ্র অঞ্চলভিত্তিক আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। শিক্ষা ও সংস্কৃতি সমৃদ্ধ মহানগরীর বিশেষত্ব অর্জন।
মহানগরীর ভৌগোলিক আয়তন ৯৬ বর্গকিলোমিটার থেকে ৩৫০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা। রাজশাহী শহরের পাশে জেগে উঠা পদ্মার চরে রিভারসিটি নির্মাণসহ শিক্ষা, স্বাস্থসেবা, শিল্প-ব্যবসা বাণিজ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো উন্নয়ন, ক্রীড়া-সংস্কৃতি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক উদ্যোগ, সামাজিক সুরক্ষা ও নারী উন্নয়ন, মুক্তিযুদ্ধ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ, প্রবীণ ও শিশুদের বিশেষ প্রণোদনাসহ বিভিন্ন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। ইশতেহার ঘোষণার সময়, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও ১৪ দলের নেতৃত্ববৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে শুরু হয়েছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) প্রার্থীদের প্রচারণা। জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন। প্রত্যাশিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রতীক পেয়ে ছুটছেন ভোটারদের কাছে।
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুরশিদ আলমকে ‘হাতপাখা’, জাকের পার্টির প্রার্থী একেএম আনোয়ার হোসেনকে ‘গোলাপ ফুল’ এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপনকে ‘লাঙল’ প্রতীক দেয়া হয়। প্রতীক বরাদ্দের পর তাদের সমর্থকেরা মিছিল করেন। এছাড়া শহরে পোস্টার ও ব্যানার-ফেস্টুন লাগানোও শুরু হয়েছে। তবে নগরজুড়ে সোভা পাচ্ছে মেয়র লিটনের পোস্টার, ব্যানার ফেস্টুন। নগরীর ওয়ার্ডগুলোতেও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ফেস্টুন ব্যানারে ছেয়ে গেছে।
শনিবার সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ অডিটোরিয়ামে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করবেন আওয়ামী লীগের মেয়লপ্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। “উন্নয়ন দৃশ্যমাণ, এবার হবে কর্মসংস্থান’ শ্লোগানকে সামনে রেখে মেয়রপ্রার্থী লিটনের নির্বাচনী ইশতেহারের অন্যতম অঙ্গীকার। আগামী ৫ বছরে ৫০ হাজার বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের অঙ্গীকার নিয়ে মাঠে নামছেন এবার নির্বাচনের আ’লীগের মনোনিত প্রার্থী লিটন।
অপরদিকে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুরশিদ আলম বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ ভাল আছে। নির্বাচন কমিশন আশ্বাস দিয়েছে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। ইভিএমের ব্যাপারে আমাদের আস্থাও আছে,শঙ্কাও আছে। শঙ্কা হলো- এক জায়গায় ভোট দিলে আরেক জায়গায় চলে যায়। তার পরেও আমি জয়ী হবো বলে আশাবাদী। জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘অনেকেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। আমরা জনগণের ভোট নিয়ে বিজয়ী হতে চাই। রাজশাহীতে জাতীয় পার্টিকে আবারও উজ্জীবিত ও নগরীকে ঢেলে সাজাতে চাই উন্নয়ন দিয়ে।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, গত ৫ বছরে রাজশাহীকে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তিলোত্তমা রাজশাহী গড়তে আমার অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করতে আরকেবার মেয়র হতে চাই আমি। এবার জনগণের মাঝেও ব্যাপক সাড়া রয়েছে। আশা করি নৌকার জয় হবেই।
প্রার্থীদের আচরণবিধি প্রতিপালনের ১০ জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারাও দেখছেন। সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরা কাজ করছি। আগামী ২১ জুন রাসিক নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। এবার মেয়র পদে চারজন ছাড়াও ১০টি সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য ৪৬ জন এবং ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের জন্য ১১২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সব কেন্দ্রেই ভোট গ্রহণ করা হবে ইভিএমে বলে গনমাধ্যমকে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.