যোগদানের আড়াইঘন্টা পর পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ
রাজশাহী ব্যুরো : অবশেষে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পিছু হটলেন রাজশাহী কলেজে নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো: আনারুল হক। মঙ্গলবার তিনি পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবির সহযোগিতায় দায়িত্ব গ্রহণ করতে যান। পরে শিক্ষমার্থীদের চাপের মুখে দায়িত্বগ্রহণের আড়াইঘন্টা পর পদত্যাগ করেন প্রফেসর ড. আনারুল হক।
এরআগে গত ৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর শহীদ বুদ্ধিজীবী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আনারুল হককে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে পদায়ন করা হয়। তিনি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছিলেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে শিক্ষা বোর্ডের ১৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় ২০২০ সালে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তাকে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে পদায়নের পর ফুসে উঠে রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা। দুর্নীতিবাজ ও আওয়ামী লীগের দালাল হিসাবে চিহ্নিত করে প্রফেসর ড. আনারুল হককে রাজশাহী কলেজের যোগদান করতে দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা এ বিষয়টি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। একই সাথে প্রফেসর ড. আনারুল হককে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার প্রফেসর ড. আনারুল হক দায়িত্ব গ্রহণের জন্য কলেজে যান। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাকে কলেজে ঢুকতে দেননি। তিনি বিভিন্ন মহল দিয়ে চেষ্টা করেন এই সানামধন্য কলেজে যোগদানের জন্য।
অবশেষে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তিনি প্রশাসনের লোকজন নিয়ে কলেজে যান যোগদান করতে। এসময় শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই প্রফেসর ড. আনারুল হককে কলেজে প্রবেশ করতে দেবে না মর্মে রাজশাহী কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এক সময় পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবির সহযোগিতায় কলেজের ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রবেশের পর কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন। এক সময় শিক্ষার্থীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠলে তোপের মুখে যোগদানের আড়াই ঘন্টা পর তিনি অধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ইব্রহীম আলী। তিনি বলেন, দুপুরে নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আনারুল হক পদত্যাগ করেছেন।
রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাস রাজশাহী কলেজে বিতর্কিত শিক্ষককে অধ্যক্ষ হিসেবে চাই না। দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর এই অধ্যক্ষকে এই কলেজে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। এখানে সৎ ও যোগ্য কাউকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়নের দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা।