ব্রেকিং নিউজ

প্রতারক চক্করের খপ্পরে ইট ভাটামালিকগণ

স্টাফ রিপোর্টার : আধুনিকতার ছোঁয়ায় ব্যবসায় এসেছে নতুন মাত্রা। যোগাযোগের সাথে বাড়ছে ব্যবসার প্রসার। ফোন কলেই আসে ইটের অর্ডার এবং ঠিকানা। তাঁর মাঝেই হতে হচ্ছে প্রতারিত। বলা হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থিত তিনটি ইট ভটার কথা। হিরো ব্রিকস, মুন ব্রিকস এবং ফায়ার ইট ভাটা এই বছরে প্রতারিত হয়েছে বলে জানা গেছে। তাঁরা বলছেন এটা একটি সিন্ডিকেট। ইট অর্ডার করছে, লোকেশন দিচ্ছে কিন্তু লোকেশনে গেলে তাঁরা ফোন বন্ধ রাখছে। আবার কেউ কেউ অর্ডার করলে ইট পাঠালে ক্ষমতা প্রদর্শন করে টাকা কম দেয়ার চেষ্টা করছে। ইট ফেলে রেখে চলে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে বলে জানান ইট ভাটার ম্যানেজাররা।

এমন তথ্য অনুসন্ধানে উঠে আসে সিন্ডিকেটের ছাপ। সোমবার (১০ জুন) এমন বিষয়ে সরেজমিনে গেলে মিলে সত্যতা। প্রতিনিয়ত পাচ্ছেন হুমকি। চাইছেন সুরাহা।

সরেজমিনে জানা যায়, একই নাম্বার থেকে রাজশাহীর প্রতিটি ইট ভাটায় ফোন করে ইট অর্ডার দেয়া হচ্ছে। নাম ধারণ করছেন বিভিন্ন নাম। মেমো হচ্ছে। সঠিক ঠিকানা বলছে না প্রতারক চক্র। কখনও অন্য কাউকে দিয়ে ইট নামিয়ে নিচ্ছে। কখনও ব্লাকমেল করছে প্রতারকরা। সেই সাথে ব্যবহার হচ্ছে একই ড্রাইভার শুকুর আলি। শুকুর আলির চাহিদা এই একই বিষয়ে। এই তিন ভাটার ইট তিনিই পৌঁছে দিচ্ছেন। দিতে গিয়ে নানা নকশার জন্ম দিচ্ছেন।

হিরো ভাটার ম্যানেজারের দেয়া তথ্যমতে, আমাদের ইটের ব্যবসা অনলাইনে এবং ফোন কলের মাধ্যমেও ভালোই চলছে। কিন্তু, এই বছরে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। লোকসানও হচ্ছি প্রতারকদের জালে। চলতি মাসের ৮ তারিখে রাজশাহী থেকে শফিকুল নামের একব্যক্তি ০১৯৫৫৬৬১৬৪২ নম্বর থেকে ৫০ হাজার টাকার ইট অর্ডার করে। লোকেশন কয়েরদাড়া খ্রিস্টান পাড়া দেয়। সেখানে ড্রাইভার মো. শুকুর আলি ইট নিয়ে যায়। তাঁরা ইট নামিয়ে নিয়ে জানায় আরও এক গাড়ী ইট না নিয়ে আসলে ইটের টাকা দেবে না। পরে, বিষয়টা জানাজানি হলে এবং প্রতারিত হতে পারি এমন ভয়ে র‍্যাব সদস্যদের উপস্থিতে ইট আবার গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে আসি।

ঘটনাটি শুরু হয় গত মাসের ১৬ তারিখে। ফায়ার ব্রিকস ভাটার ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম বলেন, গত মাসে ফোন আসে উপশহর ইট লাগবে। সেই অনুযায়ী ওই একই নম্বর থেকে কল আসে। মেমো করা হয় মেহেদী হাসান নামে। সকালে ইট পাঠিয়ে দেই ড্রাইভার শুকুরের মাধ্যমে। কিন্তু, লোকেশন বার বার তারা পরিবর্তন করছিলেন। ড্রাইভারকে বারবার বলছিলেন সময় ক্ষেপণ করতে। আশ্বাস দিচ্ছিলেন আসছে দেরি করেন। তাছাড়া উপশহরের যেকোন এক জায়গায় রেখে যাও মালিকের সাথে কথা বলে নিচ্ছি। আসলে বারবার এমন হয়রানি করার ফলে আমাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে।

মুন ব্রিকসের ম্যানেজার জানান, ওই একই নম্বর থেকে ফোন এসেছিল। নজরুল ইসলাম নামের একজন ইট অর্ডার করে এবং মেমো করা হয়। অগ্রিম টাকার কথা বললে বলে এসে ইট নামিয়ে নিয়ে যান। ফোনে বিশ্বাসের ওপর ইটা পাঠিয়েছিলাম। রাজশাহীর অবয়ের মোড় ও সিটি হাটের মাঝামাঝি ইট রিসিভ করবেন ০১৬০৪৬৪৯৬০৬ নম্বর থেকে ফোন করা পলাশ নামের এক ব্যক্তি। পরবর্তীতে তারও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। কিন্তু পরে সাগর নামের এক ব্যক্তি ইট না নামালে ড্রাইভারকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এব্যাপারে সহযোগিতা যেন করেন।

এদিকে ড্রাইভার শুকুর আলিকে প্রশ্ন করা হয় শুধু তাঁকেই কেন চাইছেন এই প্রতারকচক্র? তিনিই কেন তিনি ভাটার ইট একই নম্বরে ফোন আসা ব্যক্তির কাছে
দিতে গেলেন? তিনি জবাবে বলেন, আমাকে প্রায় ইটভাটার কাজ করি। মালিকপক্ষ যেভাবে বলেন সেভাবেই দিয়ে আসি। রাজশাহী থেকে প্রতারকদের খপ্পরে তিনবার পড়লাম। একবার এই ইট আমি পরিচিত এক জায়গায়
দিতে আসি। বারবার লোকসান মানতে পারছিলাম না। এছাড়া যারা ইট অর্ডার করছেন লোকেশনে গেলে তারা ফোন বন্ধ রাখছে। আমিও এর প্রতিকার চাই।

তবে, এবিষয়ে প্রতারকদের ফোন নম্বরে ফোন দিলে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন ইট ভাটার মালিকরা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.