ইসলামপুরে আইএইচটির ছাত্রাবাসে বহিরাগতদের মাদকের আখরা গাঁজার গাছ উদ্ধারের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

আবুল কাশেম জামালপুরঃ-
জামালপুরের ইসলামপুরে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) ছাত্রাবাসে বহিরাগতদের মাদকের আখরায় পরিণত হয়েছে। জানাগেছে, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত আবাসিক শিক্ষার্থীদের স্থানীয় এক শ্রেনীর বহিরাগত মাদকাসক্তরা তাদেও নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে রোম থেকে বেড় করে দিয়ে বিভিন্ন মাদকের আসর বসিয়ে নিবিগ্নে মাদক সেবন করে আসছে। এসব মাদক সেবনকারিদের নিষেধ করলে তাদেও নানা ভাবে শাররীক ও মানসিক নির্যাতন করাসহ প্রাণনাসের হুমকি দেয়া হয়ে থাকে। জানাগেছে গত ২জুন শুক্রবার দিবাগত রাতে আইএইচটির পঞ্চম ব্যাচের প্রথম বর্ষেও ছাত্র ও উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য মো. রিফাত আহমেদ ফারাজি, ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি রায়হানের নেতৃত্বে একদল মাদকাসক্ত বহিরাগতরা আবাসিক ছাত্রাবাসের ৩২০ নম্বর কক্ষে ঢুকে মাদক সেবন করতে থাকে। এতে কক্ষে অবস্থানরত জীবন মিয়া প্রতিবাদ করলে রিফাত ফারাজিসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা বেধড়ক পিটুনী দিয়ে মারাত্বক আহত করে। পওে তাকে উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়েগেলে সেখানে তারা অবরুদ্ধ করে রাখেন।পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জন্য হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা জাতীয় জুরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে রাত ৮ টার দিকে ইসলামপুর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহতকে উর্দ্ধার করে বাড়িতে পাঠান। এবিষয়ে ইসলামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মাজেদুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বিকার করেছেন। পরে ওইদিন রাত ১১টার দিকে জামালপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসআই মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বের একদল সদস্য গভীর রাতে হলে অভিযান চালায়। এ সময় ১টি মোটরসাইকেলসহ ছাত্রাবাসের ৩২০ ও ২১৪ নম্বর কক্ষ থেকে মাদক গ্রহণের বিভিন্ন সরঞ্জাম, ৭টি মদের খালি বোতল এবং বারান্দায় টবের মধ্যে রোপনকৃত একটি গাঁজা গাছ উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে জামালপুর মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসআই মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে বলেন, এ বিষয়ে তিনি বাদী হয়ে ইসলামপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এদিকে আবাসিক হলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্র জানায়, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, মো. আলহাজ মিয়ার ভাগ্নে পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে ছাত্রলীগের সদস্য মো. রিফাত আহমেদ ফারাজি, ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি রায়হানের নেতৃত্বে বহিরাগতরা প্রতিনিয়ত হলে ঢুকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে রোম থেকে বেড় কওে দিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত তারা মাদক সেবন করে থাকে। তারা আরো জানায়, তাদেও বাধা দিলে মারপিট করাসহ প্রাণ নাসের হুমকি দেয়া হয়। তাই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত শিক্ষার্থীরা ভয়ে তাদেও নাম পর্যন্ত প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, মো. আলহাজ মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার আপন ভাগ্নে না। সে আমার প্রতিবেশী বলে জানিয়েছেন।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক মাদক গ্রহণের সরঞ্জাম, মদেও খালি বোতল এবং টবের মধ্যে রোপনকৃত গাঁজার গাছ উদ্ধারের ঘটনায় আইএইচটির কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। প্রতিষ্ঠানের সহ-পরিচালক ডাক্তার মোহাম্মদ রবিউল ইসলামকে প্রধান করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করেছে কর্তৃপক্ষ। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, প্রভাষক ডাক্তার শাহ মো. মোখলেছুর রহমান, প্রভাষক ডাক্তার মালিহা মালবিকা মিমু, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মো. ছানোয়ার হোসেন এবং মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফার্মেসি) মো. রবিউল ইসলাম।
এদিকে রোববার (৪ জুন) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে আইএইচটির তদন্ত কমিটির সদস্য প্রভাষক ডাক্তার শাহ মো. মোখলেছুর রহমান জানান, ইতিমধ্যে আমরা তদন্ত কাজ শুরু করেছি। তদন্তের শেষে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
এবিষয়ে আইএসটির অধ্যক্ষ ডা. প্রদীপ কুমার সাহা এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রাবাসের কক্ষ থেকে মাদক গ্রহণের সরঞ্জামসহ মদের খালি বোতল এবং টবের মধ্যে রোপনকৃত গাঁজা গাছ উদ্ধার করেছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে আমরা একটি তদন্ত টিম গঠন করেছি। তদন্তের প্রতিবেদন পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।